প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস

যেমন করে ভোরের সূর্য অন্ধকারকে সরিয়ে নতুন দিনের আলো এনে দেয়, তেমনি আটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ও এই জনপদের জ্ঞানের আঁধারে দীপ্ত এক আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে।
১৯৭৬ সালের ১লা জানুয়ারি, এক স্বপ্নবাজ পুরুষ আলহাজ্ব মোঃ সিরাজুল ইসলাম – যিনি তৎকালীন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন – নিজ হাতে বুনে দেন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বীজ। তাঁর দূরদর্শিতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠে এক স্থায়ী ভিত্তি, যা আজ শিক্ষার একটি শক্তিশালী স্তম্ভে পরিণত হয়েছে।

আটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের যাত্রা ছিল একান্তই এলাকার মানুষের আলোকিত ভবিষ্যতের জন্য। গ্রামের কাদামাটির পথ ধরে হেঁটে আসা ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই বিদ্যালয় যেন জ্ঞানের এক উজ্জ্বল প্রদীপ। আজ এখানে রয়েছে ৫টি ভবন—যার মধ্যে রয়েছে দুটি চারতলা বিশিষ্ট পাকা ভবন, যেগুলো দাঁড়িয়ে আছে যেন শিক্ষার মহীরুহ। তিনটি আধা-পাকা ভবনও রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলে আন্তরিকতায় ভরা পরিবেশে।

বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন নতুন জ্ঞানের সাগরে ডুব দেয়। আছে শিক্ষক মিলনায়তন, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, এবং বিজ্ঞানাগার—যা একে একটি যুগোপযোগী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই বিদ্যালয়ের পুকুর ও খেলার মাঠ শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়ক। খেলার মাঠে প্রতিদিন শিশুদের কোলাহল আর স্বপ্নের দৌড় যেন বাংলার প্রতিচ্ছবি আঁকে।

আটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি প্রজন্ম গড়ার কারখানা। এখান থেকে যারা শিক্ষা গ্রহণ করে বের হয়েছে, তারা আলোকিত মানুষ হয়ে সমাজে অবদান রেখে চলেছে।

শেষ কথা, আটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় আজও দাঁড়িয়ে আছে সেই মহৎ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে, যেটি প্রতিষ্ঠাতা স্বপ্ন দেখেছিলেন—জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবিকতায় গড়া একটি সমাজ নির্মাণ।